চিঠি লেখার অভ্যাস তোমার ছোটবেলা থেকেই। তুমি যেখানে থাকতে, সেখানে চিঠি লেখাটা, luxury ছিল না।
ছোটবেলায় চিঠিতে কি লিখতে তুমি? কি জিজ্ঞেসা করতে? কটা রঙের কালি দিয়ে লিখতে? নীল-কালো - সবুজ - লাল - বেগনি ... কোনটা?
তোমার আঙুলগুলো বড্ড সরু সরু। সুন্দর নখ।
আমি যদি BJPর লোক হতাম, তাহলে বলতাম - "মেয়েলি দেখতে তোমার আঙুলগুলো"।
কিন্তু, আমি জানি, তোমার আঙুলগুলো শুধুই "সুন্দর" ... তুমি তো নিজেই বল, তোমার কোন gender নেই।
কিকরে বল এসব? কি ভেবে? যখন বল, তখন তোমার মুখে, অদ্ভুত এক শান্তি।
তুমি যেন, এক বাটি জুঁই ফুলের মত।
আমার বাড়িতে আর এসো না কখনও। এ চিঠি, সেই আবেদন -
আমায় ঘর খালি করতে হবে। বাড়িওয়ালা বলে দিয়েছে - হৃদয়পূরের মরশুম এতো খারাপ হলে, ঘর দেওয়া যাবে না। ঘরে ঝড় জল ঢুকলে, তাতে নাকি দেওয়াল নষ্ট হচ্ছে।
আসলে, বাড়িওয়ালা কে দোষও দেওয়া যায় না। আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলাম, ঘরের যে কোনাটায় তুমি বসতে, সেখানে রক্তের দাগ। আমি দৌড়ে এসে, সে দাগ ধুতে গিয়ে দেখি - এ রক্ত মিশে গেছে ইট আর সিমেন্টের সাথে। এ দাগ আমি তুলতে পারব না।
কয়েকদিন আগে, বারান্দার যে গ্রিলটা দেখে তুমি বলেছিলে - "উফ! একটু পরিষ্কার করে রাখিস না কেন?"। সেই গ্রিলটায় দেখলাম, মরচে পড়েছে।
পুরনো হয়ে গেলে, মরচে পড়ে, তাই না?
আমার বাড়িওয়ালা সব বোঝে।
তুমি তো কোনদিনও আলোর একেবারে সামনে বসতে না - একটু দূরে বসতে। তোমাকে আলো ছায়ার মধ্যে দেখতে পাওয়া যেত। এক দিকে ঝুঁকে - আঙ্গুলের ডগা দিয়ে ধরে, সিগারেট জ্বালাতে তুমি। এমন ভাবে চুপ করে শুনতে আমার কথা, যেন আমার মধ্যে দিয়েই, বেঁচে নিচ্ছ তুমি আবার।
তুমি চলে যাওয়ার পর, বিছানার চাদরের ভাঁজে ভাঁজে খুঁজে পেতাম তোমায়।
বাড়িওয়ালা বলেছে, বাড়ি খালি করে দিতে হবে আমায়।
চিঠি লেখা, আমি দায় পড়ে শিখেছি। আমার চিঠিতে তাই, ঠিকানা থাকে না। তোমার নাম লেখা থাকে শুধু।
এ বাড়ি খালি করে দেব আমি। তুমি কোনভাবে, ঋণ শোধ কর সন্ধেগুলোর।
ইতি,
পুরনো বাড়ি থেকে,
আমি ...